সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৫৩ অপরাহ্ন

স্বপ্নভঙ্গের মুখে সামিয়া, আশার আলো দেখালো সিআরএ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫
  • ১৭৩

অটোচালক বাবা ও গার্মেন্টস কর্মী মায়ের সংসারে জন্ম নেওয়া সামিয়া আক্তার শারমিন জেদ ও অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে সঙ্গী করে পেরিয়েছে এসএসসি পরীক্ষার বড় ধাপ। গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে প্রমাণ করেছে—সাধনা, অধ্যবসায় আর আত্মবিশ্বাস থাকলে কোনো অভাবই স্বপ্নের পথে বাধা হতে পারে না।

চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর বি-ব্লকের তালতলা পুকুরপাড় এলাকার বাসিন্দা সামিয়া। তাঁর বাবা হাবিবুর রহমান একজন অটোচালক এবং মা বিবি সায়রা গার্মেন্টস কর্মী। সামিয়ার পরিবারে নিত্যদিনের হিসাব মেলানোই যেখানে কঠিন, সেখানে প্রাইভেট পড়া বা বই কেনা বিলাসিতা বলেই ধরা হতো। কিন্তু এই প্রতিকূলতার মাঝেও সামিয়া দিনে ১০ ঘণ্টা করে পড়াশোনা করেছে, সংসারের কাজেও ছিল সহযোগী।

এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের আগে সামিয়ার জন্য সময় যেন ছিল জীবন-মৃত্যুর দোলাচলে। নিজেই বলে, “ভেবেছিলাম যদি ভালো ফল না করতে পারি, তাহলে হয়তো বিয়ে হয়ে যাবে, নাহয় গার্মেন্টসে কাজ করতে হবে।” কিন্তু দৃঢ় মনোবল আর পরিশ্রমের পুরস্কার হিসেবে এসএসসিতে পেয়েছে সর্বোচ্চ ফলাফল।

তবে এই সাফল্যের পরও সামনে অপেক্ষা করছিল অনিশ্চয়তা—কলেজে ভর্তি ও উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যাওয়ার ব্যয় মেটানোই যেখানে অসম্ভব। এমন এক দিশেহারা সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছে চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (সিআরএ)।

সিআরএ সভাপতি সোহাগ আরেফিন এবং সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. রবিউল হোসেন সামিয়ার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং জানিয়ে দেন—এই লড়াকু মেয়ের স্বপ্নপূরণে সিআরএ থাকবে অভিভাবকের ভূমিকায়।

সিআরএ সভাপতি বলেন, “সামিয়া হচ্ছে আমাদের মডেল কন্যা। তার স্বপ্ন জয়ে আমরা পাশে থাকব ছায়ার মতো। এটাই আমাদের সংগঠনের শান্তিময় তৃপ্তি।”

সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খোকন জানান, “সিআরএ পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠন হলেও আমরা সবসময় সামাজিক দায়বদ্ধতায় বিশ্বাসী। সামিয়ার মতো মেধাবীদের পাশে দাঁড়াতে পারা আমাদের জন্য গর্বের।”

এসময় সিআরএ’র সহ-সভাপতি রাজু আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের রাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রুবেল, দপ্তর সম্পাদক মো. আশরাফ উদ্দিন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাকিল, সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. রবিউল হোসেন, সদস্য জহির উদ্দীন বাবর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মেধাবী সামিয়া এখন নতুন করে স্বপ্ন দেখছে—কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। তার ভাষায়, “পা রাখছি কলেজে, পাশে আছে সিআরএ। স্বপ্ন জয় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ইনশাআল্লাহ।”

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো খবর