
বছর ঘুরে এসেছে সেই ঐতিহাসিক রক্তাক্ত জুলাই, যে জুলাইয়ের উত্তাল গণঅভ্যুত্থান বদলে দিয়েছিল বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপথ, উন্মোচন করেছিল এক নতুন সূর্যের দুয়ার।
সেই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ (৫ আগস্ট) সীতাকুণ্ড উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে এক বিজয় র্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় সীতাকুণ্ড সরকারি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. কমল কদরের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব কাজী মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে বক্তারা বলেন—“জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল বাংলাদেশের মানুষের আত্মপরিচয়, ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ১৬ বছরের সংগ্রামের মাইলফলক।”
র্যালিটি বিদ্যালয় মাঠ থেকে শুরু হয়ে উত্তরে বটতলী এবং দক্ষিণে উপজেলা হাসপাতাল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে, পরিণত হয় এক বিশাল জনসমুদ্রে। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয় সীতাকুণ্ডের রাজপথ।
বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ স্বৈরাচারী উৎপীড়নই এই গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি তৈরি করেছিল।
এই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা, শ্রমজীবী মানুষ, পেশাজীবীসহ সর্বস্তরের নাগরিক ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফ্যাসিবাদের নাগপাশ ছিঁড়ে দেয়।
বক্তারা আরও বলেন—“জুলাইয়ের দাবানল কেবল স্বৈরাচার পতনের বার্তা বহন করেনি, এটি ছিল নতুন আত্মপরিচয়ের সূচনা। ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রতিরোধের সেরা উদাহরণ হয়ে থাকবে এই দিনটি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন— উদয় কুসুম বড়ুয়া, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদককাজী সালাউদ্দিন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক সালেহ আহমেদ সলু, সদস্য সচিব, পৌর বিএনপি জয়নাল আবেদীন দুলাল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা বিএনপি সোলাইমান মঞ্জু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, উত্তর জেলা যুবদল মোরসালিন, সাবেক সভাপতি, উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল শামসুল আলম আজাদ, কাউন্সিলর নার্গিস আক্তার, বিএনপি নেত্রী এ্যাড. রওশন আরা, আইনজীবী নেত্রী
এস. এম. লোকমান হাকিম, ইউসুফ নিজামী, ফজলুল করিম চৌধুরী, জিতেন্দ্র নারায়ণ নাটু, খোরশেদ আলম মেম্বার, জাফর আহমেদ ভূঁইয়া, নাজিমুদ্দোলা, এবং আরো বহু নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা কোটা সংস্কার আন্দোলনের ৩৬ দিনের রক্তাক্ত অধ্যায় থেকে এই অভ্যুত্থানের সূত্রপাতের কথা স্মরণ করেন।
তারা বলেন, “যে ক্ষোভ জমেছিল কোটা সংস্কারের নামে বৈষম্যের বিরুদ্ধে, তা এক সময় রূপ নেয় ফ্যাসিবাদবিরোধী গণবিদ্রোহে। এই আন্দোলনে শহীদ ১২ জন বীর চট্টগ্রামসহ দেশজুড়ে লাখো মানুষ আত্মত্যাগের নজির স্থাপন করে।”
সীতাকুণ্ড বিএনপির আয়োজিত এই গণসমাবেশ ও বিজয় র্যালি ছিল শুধু একটি কর্মসূচি নয়—বরং তা ছিল মুক্তির ইতিহাস স্মরণের, ঐক্য, আত্মত্যাগ ও গণতন্ত্রের পুনর্জাগরণের একটি দৃপ্ত উচ্চারণ।