
চট্টগ্রাম বন্দরে সাম্প্রতিক সময়ে জাহাজ জট সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো বন্দরের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বন্দরের নিজস্ব কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে; মূল সমস্যা দেখা দিয়েছে নির্দিষ্ট কিছু ফিডার পোর্টে অতিরিক্ত চাপের কারণে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রামের মাধ্যমে দেশের ৯৮% কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়ে থাকে। বন্দরের ফ্যাসিলিটি, ইয়ার্ড স্পেস, যন্ত্রপাতি, জাহাজের সময়ানুযায়ী আগমন এবং রপ্তানির জন্য পর্যাপ্ত স্থান ব্যবহার সবদিক থেকেই অপ্টিমাম সক্ষমতা বজায় রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরিপোশাক শিল্পের জন্য নির্ধারিত ফিডার পোর্টগুলোতে অস্বাভাবিক সংখ্যক জাহাজ ভিড় করায় জট তৈরি হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ৪-৫ মাস ধরে ফিডার অপারেটররা তাদের রুটিন শিডিউল অনুসরণ না করে অ্যাড হক ভিত্তিতে অতিরিক্ত জাহাজ পাঠাচ্ছে। এতে নির্দিষ্ট কিছু ফিডার পোর্টে অস্বাভাবিক ব্যাকলগ তৈরি হয়েছে। অনেক সময় ফিডার অপারেটর বা শিপিং কোম্পানিগুলো বন্দরের পূর্ব অনুমতি ছাড়াই এসব জাহাজ পাঠায়, যা বন্দরের কার্যক্রমে অনাকাঙ্ক্ষিত চাপ সৃষ্টি করছে। এতে করে ফিডার জাহাজে রপ্তানিযোগ্য কন্টেইনার উঠানোর ক্ষেত্রে বিলম্ব ঘটছে।
বন্দর সচিব আরও জানান, বন্দরে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ১৩০ থেকে ১৫০টি কন্টেইনারবাহী ট্রাক অপেক্ষমাণ থাকে, যেগুলো নির্ধারিত সময় অনুযায়ী জাহাজে লোড করা সম্ভব হয় না। এর ফলে রপ্তানিকারকদের শিপমেন্ট সময়সীমা ব্যাহত হচ্ছে, এবং সামগ্রিকভাবে দেশের বাণিজ্য কার্যক্রমে প্রভাব পড়ছে। এ সমস্যা সমাধানে ফিডার অপারেটর ও শিপিং কোম্পানিগুলোকে পরিকল্পিতভাবে আগাম অনুমতি নিয়ে জাহাজ পাঠানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২০ জুলাই বাংলাদেশ কনটেইনার শিপিং অ্যাসোসিয়েশন (BCSA) এবং বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (BSAA)-এর সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সভায় স্থায়ী সমাধানের জন্য ফিডার জাহাজ পরিচালনায় সময়ানুগ শিডিউল মেনে চলার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। পাশাপাশি বিকল্প রুট ব্যবহারের বিষয়েও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে, রপ্তানি বান্ধব নীতির আওতায় শিপিং কোম্পানি, ফিডার অপারেটর এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা যদি সমন্বয় করে কাজ করে, তাহলে এই জটিলতা সহজেই নিরসন সম্ভব। পাশাপাশি যেকোনো ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন থেকে বিরত থাকতে সকল মহলের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।