
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রমজানের আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দেওয়ার পরদিন, বুধবার এ চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিটি নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বরাবর পাঠানো হয়। এতে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নিতে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করা হয়েছে।
সরকারি আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন, এখন তফসিল ঘোষণার পালা
এই চিঠির মাধ্যমে সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানানোর আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলো। এখন নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের নির্দিষ্ট দিন-তারিখসহ তফসিল ঘোষণা করবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এরইমধ্যে জানিয়েছেন, ডিসেম্বরের শেষার্ধে তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে।
সিইসির মন্তব্য: প্রস্তুতি অনেক আগেই শুরু হয়েছে
বুধবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন,“মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা তো গতকাল একটি ঘোষণা দিয়েছেন। উনি বলেছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে রোজার আগে নির্বাচন করার জন্য আমাদেরকে চিঠি দেবেন। আমি প্রত্যাশা করছি, দ্রুত চিঠিটা পেয়ে যাব।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে প্রস্তুতি অনেক আগেই শুরু করেছি। তারিখ নিয়ে অভ্যন্তরীণ আলোচনা চলছিল। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার চ্যালেঞ্জ থাকলেও আমরা প্রস্তুত, ইনশাআল্লাহ কোনো ঘাটতি থাকবে না।”
ভোটের দুই মাস আগে তফসিল ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করে সিইসি বলেন,
“যেদিন আমরা পোলিং ডেট ঠিক করব, তার দুই মাস আগে তফসিল হবে।”
চিঠির মূল বার্তা: নির্বাচনের দিন হবে মহা–আনন্দের উৎসব
প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে,
“আগামী নির্বাচন যেন নাগরিকদের জন্য মহা-আনন্দের ভোট উৎসবের দিন হিসেবে স্মরণীয় হয়, সে অনুযায়ী সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।”
চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য অনুযায়ী অবিলম্বে প্রস্তুতি গ্রহণ জরুরি।
১৫ বছর ধরে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত নাগরিকদের জন্য এবারের নির্বাচন হবে ঐতিহাসিক
নারী ও প্রবাসী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
নির্বাচনকে আনন্দ–উৎসব, শান্তি–শৃঙ্খলা ও আন্তরিকতার প্রতীক হিসেবে রূপ দিতে হবে।
চিঠিতে ভোটগ্রহণ প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে এবং নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় সব ক্ষেত্রে সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করা হয়েছে।