মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন

সলিমপুরে স্থানীয়দের মুখোমুখি প্রশাসন, নাগরিকসেবা নিশ্চিতের আশ্বাস

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি
  • মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫
  • ১৬৯

ছাত্রজনতার গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পর সারাদেশের মতো চট্টগ্রাম জেলার ইউনিয়ন পরিষদগুলোতেও জনপ্রতিনিধি শূন্য। ১৯১টি ইউনিয়নের মধ্যে মাত্র ৩৬টিতে জনপ্রতিনিধি থাকায় বাকিগুলোতে নাগরিকসেবা ব্যাহত হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে জনসেবার মান উন্নয়নে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ইউনিয়নে নাগরিকসেবা বিষয়ক গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী এই গণশুনানির আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। এতে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদা খানম। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ সাদি উর রহিম জাদিদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন,“সরকার জনগণের সেবায় বদ্ধপরিকর। এ ধরনের গণশুনানি আমাদের সরাসরি সমস্যাগুলো শুনে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করে। ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তি, শিক্ষা ও অবকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।”

তিনি আরও মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সমন্বিতভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন।

অতিরিক্ত বলেন, “প্রথমবারের মতো সীতাকুণ্ডের সলিমপুরে স্থানীয়দের সরাসরি কথা শোনার সুযোগ হলো। জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে প্রতিটি উপজেলায় এমন গণশুনানি আয়োজন করা হবে।”

গণশুনানিতে স্থানীয়রা সরাসরি বিভিন্ন সমস্যা ও অভিযোগ তুলে ধরেন। ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা, রাস্তা-কালভার্ট নির্মাণ, মৎস্যজীবীদের জীবিকা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার সংকট, শ্মশান সংস্কার, মাদক ও কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। শিক্ষা ক্ষেত্রে সংকটের কথা তুলে ধরেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় শিক্ষকরা। জেলা প্রশাসক এসব অভিযোগ শুনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানান এবং দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। ইউএনও ও এসিল্যান্ডকে তিনি ইউনিয়নের সড়ক ও শ্মশান সংস্কার এবং কালভার্ট নির্মাণের নির্দেশ দেন।

গণশুনানিতে উপস্থিত স্থানীয়রা জানান, জেলা প্রশাসকের এ উদ্যোগ সময়োপযোগী। নিয়মিত গণশুনানি হলে নাগরিক সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে এবং প্রশাসন-জনগণের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে ১০ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হয়। পাশাপাশি সীতাকুণ্ডে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পাঁচ পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। এ সময় উপস্থিত অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ করেন এবং পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলতাপ হোসেন, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কল্লোল বড়ুয়া, কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ্, এলজিইডি কর্মকর্তা আলমগীর বাদশা, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জামিরুল ইসলাম প্রমুখ।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো খবর