
টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় মুক্তিপণের টাকা ফেলে আসার পর অপহৃত যুবককে উদ্ধার করেছে পরিবার। অপহৃতের বাবা নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ভুক্তভোগী যুবক মো. হাসিম (২৮), কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের কোনাপাড়া এলাকার নুর হোসেনের ছেলে। বুধবার (২০ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে মুক্তিপণের টাকা পৌঁছে দেওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা।
নুর হোসেন জানান, তার ছেলে মো. হাসিম গত ১০ আগস্ট রবিবার সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং মুদির দোকানের জন্য মালামাল ক্রয়ের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। পরে ১৬ আগস্ট কাজ শেষে মালামাল কিনে সেন্টমার্টিন ফেরার প্রস্তুতি নিলে টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া নৌঘাট এলাকা থেকে অপহরণ করা হয় তাকে।
অপহরণের পর মুক্তিপণ হিসেবে প্রথমে ১০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। দর কষাকষির পর অপহরণকারীরা ৪ লাখ টাকায় সমঝোতা করে। বুধবার বিকাল ৪টার দিকে অপহরণকারীদের নির্দেশে টেকনাফের জাদিমুরা এলাকার গহীন পাহাড়ে টাকা রেখে আসেন নুর হোসেন। এক ঘণ্টা পর সেখানে গিয়ে নিজের ছেলেকে উদ্ধার করেন তিনি।
অপহরণকারীদের হাতে হাসিম দফায় দফায় নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার বাবা। তিনি বলেন,
“ওরা বলেছিল টাকা না দিলে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে। বাধ্য হয়ে তাদের কথামতো পাহাড়ে টাকা রেখে আসি। বিকাল ৫টার দিকে আমার ছেলেকে পাই, খুবই অসুস্থ অবস্থায়।”
বর্তমানে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, টেকনাফে অপহরণ এখন বড় ধরনের সামাজিক আতঙ্কে রূপ নিয়েছে। শুধু গত সাড়ে ১৮ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৫৬ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়াতে হয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি ও অভিযান সত্ত্বেও সংঘবদ্ধ অপহরণচক্র পার্বত্য এলাকার দুর্গম স্থানে সক্রিয় রয়েছে। এ অবস্থায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।