বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:১৮ পূর্বাহ্ন

রেলের আয়-যাত্রীতে শীর্ষে ঢাকা–চট্টগ্রাম, ভ্রমণে কক্সবাজারে যাত্রী ঢল

জাহাঙ্গীর আলম
  • সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১৮৪

বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে চলাচলরত আন্তনগর ট্রেনগুলো গত অর্থবছরে ভাড়া বাবদ আয় করেছে পাঁচ শতাধিক কোটি টাকা। এর মধ্যে সর্বাধিক আয় হয়েছে ঢাকা–চট্টগ্রাম রুট থেকে। তবে যাত্রীদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে নতুন চালু হওয়া ঢাকা–কক্সবাজার রেলপথ।

বিদায়ী অর্থবছরে (২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত) পূর্বাঞ্চলের ২৯ জোড়া আন্তনগর ট্রেনে যাতায়াত করেছেন প্রায় ১ কোটি ৫১ লাখ যাত্রী। তাঁদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় হয়েছে ৫০৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

ঢাকা–চট্টগ্রাম রুটে আয় ও যাত্রী

ঢাকা–চট্টগ্রাম রেলপথে ছয় জোড়া আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। এই রুটে যাতায়াত করেছেন প্রায় ৪০ লাখ ৩৮ হাজার যাত্রী। আয় হয়েছে ১৬৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা।

সবচেয়ে বেশি আয় করেছে তূর্ণা এক্সপ্রেস৩১ কোটি ২০ লাখ টাকা। এরপর রয়েছে সুবর্ণ এক্সপ্রেস (২৯ কোটি ৫৮ লাখ) এবং সোনার বাংলা এক্সপ্রেস (২৯ কোটি টাকা)। প্রতিটি ট্রেনেরই আয় দাঁড়িয়েছে ২০ কোটির ওপরে।

রেল কর্মকর্তাদের মতে, দেশের প্রশাসনিক রাজধানী ঢাকা এবং অর্থনৈতিক রাজধানী চট্টগ্রামের মধ্যে নিয়মিত যাতায়াতের কারণে এই রুট সবসময়ই সর্বাধিক ব্যস্ত ও আয়সমৃদ্ধ।

কক্সবাজার রুট: নতুন তারকা

চলতি অর্থবছরের বড় চমক কক্সবাজার রুট। চালুর পর থেকেই এ রুট যাত্রীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গত ১২ মাসে ঢাকা–কক্সবাজার রুটে চলাচলরত দুই জোড়া ট্রেনে যাত্রী ছিলেন ১০ লাখ ২৯ হাজারের বেশি। ভাড়া বাবদ আয় হয়েছে ৮৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে কক্সবাজার এক্সপ্রেস আয় করেছে ৪৭ কোটি ৫২ লাখ এবং পর্যটক এক্সপ্রেস আয় করেছে ৩৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রুটে চলাচলরত দুই জোড়া ট্রেনে যাতায়াত করেছেন প্রায় ৩ লাখ ৯৪ হাজার যাত্রী। আয় হয়েছে ৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

ঢাকা থেকে সড়কপথে কক্সবাজার যেতে দীর্ঘ ভ্রমণ, যানজট, দুর্ঘটনার ঝুঁকি ও ভোগান্তি এড়িয়ে যাত্রীরা ট্রেনকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। এ কারণে কক্সবাজার রুট এখন রেলওয়ের জন্য অন্যতম লাভজনক লাইন।

অন্যান্য রুটের চিত্র

ঢাকা–সিলেট রুটে আয় হয়েছে ৭৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যাত্রী পরিবহন ২৬ লাখ ৮৫ হাজার। এককভাবে সর্বাধিক যাত্রী বহন করেছে পারাবত এক্সপ্রেস১০ লাখ ২৪ হাজার

ঢাকা–দেওয়ানগঞ্জ রুটে আয় হয়েছে ৪০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, যাত্রী পরিবহন ১৩ লাখ ৭২ হাজার

ঢাকা–কিশোরগঞ্জ রুটে আয় ২০ কোটি ৫১ লাখ টাকা, যাত্রী ১৬ লাখ ৫৬ হাজার।

ঢাকা–মোহনগঞ্জ রুটে আয় ২১ কোটি টাকা, যাত্রী ৯ লাখ ২৮ হাজার।

রেল কর্মকর্তাদের মত

চট্টগ্রামের বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক এ বি এম কামরুজ্জামান বলেন, “ঢাকা ও চট্টগ্রাম দেশের দুই গুরুত্বপূর্ণ শহর। প্রশাসন ও বাণিজ্যের কারণে এই রুট সবসময়ই যাত্রীতে ভরা থাকে। তবে কক্সবাজার রুট চালুর পর থেকে সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এখানে টিকিটের বিপুল চাহিদা রয়েছে। আরও ট্রেন চালু করলে যাত্রীর কোনো ঘাটতি হবে না। সিলেট বা চাঁদপুর থেকেও সরাসরি কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চালানো হলে যাত্রী পাওয়া যাবে।”

তবে ইঞ্জিন সংকটের কারণে আপাতত নতুন ট্রেন চালু করা যাচ্ছে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো খবর