
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন নিয়ে আইনি জটিলতার মধ্যে নতুন মোড় এসেছে। হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশের ওপর আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছেন। এদিন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এ আদেশ দেন। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করলে আদালতে তাদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
হাইকোর্টের আদেশ ও আইনি প্রক্রিয়া
গতকাল সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্ট ডাকসু নির্বাচন আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করেন। তবে একই দিন চেম্বার আদালত হাইকোর্টের সেই আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার নতুন আদেশে আবারও স্থগিতাদেশ বহাল রাখা হলো বুধবার পর্যন্ত।
ডাকসু নির্বাচন ঘিরে এ রিটের সূত্রপাত হয় গত ২৮ আগস্ট। ওইদিন ‘অপরাজেয় ৭১’, ‘অদম্য ২৪’ জোটভুক্ত বামপন্থি প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বি এম ফাহমিদা আলম এস এম ফরহাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। এর ভিত্তিতেই আদালতের স্থগিতাদেশ আসে।
নির্বাচনের তফসিল ও প্রার্থিতা
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনে ভোটগ্রহণের কথা ছিল। এই নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যেই ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ও বামপন্থি ছাত্রসংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠন পৃথক প্যানেল ঘোষণা করেছে। পূর্ণ ও আংশিক মিলিয়ে এবারের নির্বাচনে মোট ১০টি প্যানেল অংশ নিচ্ছিল।
ডাকসুর ২৮টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৪৭১ জন প্রার্থী, যার মধ্যে নারী প্রার্থী রয়েছেন ৬২ জন। শুধুমাত্র সদস্য পদেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২১৭ জন প্রার্থী। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে ১৩টি পদে মোট এক হাজার ৩৫ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
রাজনৈতিক গুরুত্ব
বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘদিন পর ডাকসু নির্বাচন ঘিরে ছাত্ররাজনীতিতে নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়েছিল। তবে আইনি জটিলতা নির্বাচনী উত্তেজনায় অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। ছাত্রসমাজ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই নির্বাচনকে গণতান্ত্রিক চর্চার বড় সুযোগ হিসেবে দেখছিল। তাই আদালতের চূড়ান্ত রায়ের দিকে এখন সবার নজর।
সারসংক্ষেপে বলা যায়, ডাকসু নির্বাচনের ভবিষ্যৎ এখন নির্ভর করছে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের রায়ের ওপর। বুধবারের শুনানিই নির্ধারণ করবে নির্বাচন যথাসময়ে হবে নাকি আরও বিলম্বিত হবে।