
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদ্যমান ভূমি সমস্যা সকলকে সাথে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করা সম্ভব। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভূমি ব্যবস্থাপনায় মাস্টার প্ল্যান থাকে, যেখানে ভূমির ব্যবহার, মালিকানা ও পরিকল্পনা নির্ধারিত থাকে। আমাদের দেশেও ভূমি ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজেশন অত্যন্ত জরুরি, বিশেষ করে ভূমির জোনিং ম্যাপ প্রণয়ন অপরিহার্য।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্প-এর আওতায় পার্বত্য জেলা সমূহের ভূমি ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজেশন সংক্রান্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে ল্যান্ড হোল্ডিং অনেকটাই কমিউনিটি ভিত্তিক। জমির সত্ত্ব ও অংশ ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিশ্চিত করা জরুরি। শুধু ইশারা দিয়ে জমি পরিমাপের দিন শেষ— উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক সময় একই জমি একাধিকজনের কাছে বিক্রি হয়। হেডম্যান ও কার্বারীদের প্রতারণা বন্ধের কৌশল জানা নাই। ভূমি জটিলতার কারণেই পার্বত্য অঞ্চলে দারিদ্র্যের হার বেশি। পরিবেশবান্ধব ভূমি ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা ও ভূমির দুর্নীতি বন্ধে ডিজিটালাইজেশনের বিকল্প নেই।
আসন্ন দুর্গাপূজা ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান ‘কঠিন চীবর দান’ নিরাপদ ও আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপনের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানান উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। একইসাথে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশ দেন।
কর্মশালায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এমদাদুল হক চৌধুরী ভূমি ব্যবস্থাপনা সহজীকরণ বিষয়ে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।
সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ বলেন, ভূমি ব্যবস্থাপনায় নাগরিকরা সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হয়। প্রধান উপদেষ্টা চান, হয়রানিমুক্ত ভূমি ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠুক, এবং মন্ত্রণালয় সে লক্ষ্যে কাজ করছে।
কর্মশালা শেষে বিকেলে একই স্থানে তিন পার্বত্য জেলার সার্কেল চীফ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক, হেডম্যান ও কার্বারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ভূমি উন্নয়ন কর পুনঃনির্ধারণ, রেকর্ড রুমের তথ্য স্ক্যান করে সংরক্ষণ ও হেডম্যানদের সঙ্গে সমন্বয়, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, বাজার ফান্ড সংক্রান্ত বিষয় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার মাধ্যমে নিষ্পত্তি এবং রাঙামাটি এসি ল্যান্ড অফিস ভবন নির্মাণসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়।
চট্টগ্রাম বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন—
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) অনুপ কুমার চাকমা
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এমদাদুল হক চৌধুরী
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার
খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা
তিন পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসকগণ, হেডম্যান-কার্বারীগণ, সাংবাদিক ও কর্মকর্তারা।