
লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে চলছে ঘুষ বাণিজ্যের সাম্রাজ্য। আর এ সাম্রাজ্যের হোতা কোনো কর্মকর্তা নন, বরং একজন অফিস সহায়ক (পিয়ন) নয়ন কুমার।
অভিযোগ উঠেছে, নিয়মিত দায়িত্বকে উপেক্ষা করে নয়ন কুমার ব্যক্তিগত ল্যাপটপ ব্যবহার করে অফিস কক্ষে বসে জমি সংক্রান্ত সেবার নামে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা। সাধারণ মানুষ নিরুপায় হয়ে সরকারি ফি-এর বাইরে অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে ভূমি সেবা নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নামজারি, খাজনা-খারিজ, অনলাইন আবেদন, পর্চা উত্তোলনসহ নানা সেবার জন্য তিনি নির্ধারিত ফি-এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি টাকা আদায় করেন। এমনকি নিজের মুখেই নয়ন কুমার স্বীকার করেছেন, “ডিসিআর বাবদ ১৫০০ টাকা নিয়েছি। নির্ধারিত ফি ১১০০ টাকা, বাকি ৪০০ টাকা নিয়েছি যাতায়াত বাবদ।”
শুধু তাই নয়, একজন পিয়ন হয়েও দাপটের সঙ্গে অফিসে আধিপত্য বিস্তার করেন তিনি। ব্যক্তিগত প্রাইভেট কারে চলাফেরা করেন, রংপুরে নিজস্ব বাড়িও রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন— “গাড়িটি আমার শ্বশুর উপহার দিয়েছেন।”
ভূমি সেবার নামে এমন অনিয়ম-দুর্নীতিতে ক্ষুব্ধ সেবা-প্রত্যাশীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান, “জমি খারিজ করার নামে আমার কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা নিয়েছেন। সরজমিনে গেলে অনেকের কাছেই একই অভিযোগ পাওয়া যাবে।”
অভিযোগের বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এসিল্যান্ড মেহেদী ইমাম বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এভাবে একজন পিয়নের হাতে ভূমি অফিস জিম্মি হয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এখন দেখার বিষয় প্রশাসন কত দ্রুত অনিয়মের এই দৌরাত্ম্য বন্ধে পদক্ষেপ নেয়।