মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ১১:২১ অপরাহ্ন

রেলের স্ক্র্যাপ ইস্যুতে তিন কর্মকর্তার প্রতিবাদ: “প্রকাশিত সংবাদ বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত”

নিজস্ব প্রতিবেদক | বার্তা টুডে
  • বুধবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৪৩৫

দৈনিক ঈশান’-এ প্রকাশিত রেলের স্ক্র্যাপ কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত ধারাবাহিক প্রতিবেদন নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রেলওয়ের তিন কর্মকর্তা। তারা দাবি করেছেন— সংবাদে উল্লিখিত তথ্যসমূহ “মিথ্যা, বানোয়াট, তথ্যবিকৃত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পরিবেশিত” হয়েছে, যা সৎ ও কর্মনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা।

০৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে “দৈনিক ঈশান”-এর সম্পাদক বরাবর প্রেরিত এক লিখিত প্রতিবাদলিপিতে জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক (সরঞ্জাম শাখা), পাহাড়তলী মোঃ সাজ্জাদুল ইসলাম, যন্ত্র প্রকৌশলী (সদর) (পূর্ব) সৈয়দ মোঃ আমীর উদ্দিন এবং সহকারী সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক (পরিদর্শন) রফিক উল্লাহ যৌথভাবে এ প্রতিবাদ জানান।

ধারাবাহিক প্রতিবেদনের শিরোনামসমূহ

১️, “কমিশন-স্ক্র্যাপ সব খান, তবুও সাধু রেল কর্মকর্তা সাজ্জাদ” (১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫)
২️,“চট্টগ্রামে রেলের শতকোটি টাকার স্ক্র্যাপের গোপন ভান্ডার” (২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫)
৩️, “চট্টগ্রামে রেলের স্ক্র্যাপের গোপন ভান্ডার খুঁজে পেল দুদক টিম” (৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫)

প্রতিবাদলিপিতে তিন কর্মকর্তা বলেন, “রেলওয়ের ইনভেন্টরি কন্ট্রোল সেলের সব কার্যক্রম নির্ধারিত বিধি-বিধান ও সফটওয়্যার-ভিত্তিক রেকর্ড অনুযায়ী সম্পন্ন হয়। এখানে ইচ্ছেমতো কিছু করার কোনো সুযোগ নেই।”

তারা দাবি করেন, “স্ক্র্যাপ বিক্রির প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ নীতিমালা অনুসারে পরিচালিত হয় এবং জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক বা কর্মব্যবস্থাপক কেউই স্ক্র্যাপ মালামাল বোঝাইয়ের দায়িত্বে থাকেন না।”

প্রতিবাদলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, “প্রতিবেদনে যে চুরির ঘটনার কথা বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ বানোয়াট। পাহাড়তলী ডিপো থেকে কোনো স্ক্র্যাপ চুরির ঘটনা ঘটেনি এবং এ সংক্রান্ত কোনো মামলা বা জিডিও হয়নি।”

প্রতিবেদনে এক কর্মকর্তাকে রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এ বিষয়ে তারা বলেন,
“সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে আমরা কেউই কোনো রাজনৈতিক দলে সম্পৃক্ত নই। সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী আমরাও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করি।”

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, দুদকের তদন্ত সংক্রান্ত যে তথ্য সংবাদে প্রকাশ করা হয়েছে, তা যাচাই না করেই প্রচার করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের ভাষ্য— “তদন্তাধীন বিষয়ের সংবাদ প্রকাশ তদন্ত প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে, যা প্রশাসনিকভাবে অনুচিত।”

প্রতিবাদলিপিতে কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন, “প্রকাশিত প্রতিবেদনের মাধ্যমে সৎ ও ন্যায়নিষ্ঠ কর্মকর্তাদের ভাবমূর্তি বিনষ্টের চেষ্টা করা হয়েছে। এটি সাংবাদিকতার নৈতিকতা ও পেশাগত দায়িত্ববোধের পরিপন্থী।”

তারা প্রতিবেদক ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও অনুরোধ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য,  সৈয়দ মোহাম্মদ আমীর উদ্দিন, প্রাক্তন কর্ম ব্যবস্থাপক নির্মাণ স্ক্র্যাপ টেন্ডার, বিক্রি ও বোঝাই কোনো প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত ছিলেন না। তারপরে ও ওনার নামে মিথ্যা, বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে বলে জানান রেলওয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তারা।

এই প্রতিবাদলিপির অনুলিপি প্রেরণ করা হয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব, রেলওয়ের মহাপরিচালক, মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব), প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক, দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয়সহ মোট ১১টি দপ্তরে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো খবর