ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, ভোটের পরিবেশ সংরক্ষণ ও প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম সুসংহত করতে একটি বিস্তৃত কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তিনটি পৃথক পর্যায়ে মাঠপর্যায়ে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, সংখ্যালঘু নিরাপত্তা, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের চলাচলসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এআই প্রযুক্তিনির্ভর বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রতিরোধে বিশেষ কর্মপন্থাও নির্ধারণ করেছে কমিশন।
সোমবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির সিনিয়র সচিবসহ সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
তিন ধাপে নিরাপত্তা ব্যবস্থা
১) তফসিল ঘোষণার আগেই:
চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও বিঘ্নসৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় নজরদারি জোরদার করা হবে।
২) তফসিল থেকে ভোটগ্রহণ পর্যন্ত:
প্রার্থীদের প্রচারণা নির্বিঘ্ন রাখা ও ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশ মাঠে থাকবে। এ সময় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, কোস্টগার্ড এবং ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন থাকবে।
৩) ভোট-পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা:
সহিংসতা প্রতিরোধে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স অবস্থান করবে। আইনি নির্দেশনা দেবেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এবং সংক্ষিপ্ত বিচার কার্য সম্পাদনে থাকবেন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটি।
কর্মপরিকল্পনার বিশেষ দিকসমূহ
নির্বাচনি এলাকায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ অভিযান
সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশেষ নজরদারি
এআই-চালিত বিভ্রান্তিকর তথ্য ও অপপ্রচার প্রতিরোধে কঠোর মনিটরিং
বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনগত সহায়তা
পোস্টাল ব্যালট নিরাপদ পরিবহন নিশ্চিত করা
In Aid to the Civil Power অনুযায়ী সশস্ত্রবাহিনী মোতায়েন পরিকল্পনা প্রণয়ন
নিরাপত্তা ঝুঁকিতে নির্বাচনি এলাকায় ড্রোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা
ইসি জানায়, শান্তিপূর্ণ ভোট পরিবেশ তৈরিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় নিশ্চিত করা হবে। পল্লী অঞ্চল পর্যন্ত শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গ্রাম পুলিশ, চৌকিদার, দফাদার এবং ইউপি সচিবদেরও সম্পৃক্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।