
কাস্টমস হাউস, চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষ আমদানি নিষিদ্ধ বিপুল পরিমাণ ঘনচিনি (Sodium Cyclamate) আটক করেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল, ঢাকা এবং কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। আটককৃত পণ্যের চালানে মোট ৩টি কন্টেইনারে ৬০ হাজার ৪৮০ কেজি ঘনচিনি ছিল।
কাস্টমস সূত্র জানায়, “এইচ পি ইন্টারন্যাশনাল” নামে একটি প্রতিষ্ঠান সোডা অ্যাশ লাইট আমদানির ঘোষণা দিয়ে চীন থেকে ১৬ আগস্ট ২০২৫ তারিখে উক্ত কন্টেইনারগুলো আমদানি করে। পরে সেগুলো খালাসের উদ্দেশ্যে গোল্ডেন কন্টেইনার লিমিটেড, উত্তর কাট্টলী, সিটি গেট, চট্টগ্রাম ডিপোতে এনে রাখা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাস্টমস হাউস খালাস প্রক্রিয়া স্থগিত করে ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার উপস্থিতিতে কন্টেইনারের কায়িক পরীক্ষা সম্পন্ন করে।
নমুনা উত্তোলনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যানোপ্রযুক্তি সেন্টার, খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব এবং কাস্টমস হাউসের নিজস্ব ল্যাবে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তিনটি ল্যাবের পরীক্ষায়ই পণ্যটি সোডিয়াম সাইক্লামেট তথা নিষিদ্ধ “ঘনচিনি” হিসেবে শনাক্ত হয়।
সোডিয়াম সাইক্লামেট একটি কৃত্রিম মিষ্টিকারক, যা সাধারণ চিনির তুলনায় ৩০-৫০ গুণ বেশি মিষ্টি। মিষ্টান্ন, আইসক্রিম, বেকারি, বেভারেজ, কনডেন্সড মিল্ক, শিশু খাদ্যসহ নানাবিধ খাদ্য তৈরিতে অসাধু ব্যবসায়ীরা এটি ব্যবহার করে থাকে। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এই উপাদান ক্যান্সার, কিডনি ও লিভারের জটিল রোগের কারণ হতে পারে। এ কারণে আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২০২৪ অনুযায়ী ঘনচিনি আমদানি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
নিষিদ্ধ পণ্য আমদানির ফলে কাস্টমস আইন, ২০২৩ অনুযায়ী কাস্টমস হাউস পণ্যচালানটি আটক করেছে এবং আমদানিকারকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আলোচ্য চালানের শুল্কায়নযোগ্য মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা এবং পণ্যের ওপর প্রযোজ্য শুল্ক-করহার ৬১.৮০%।
কাস্টমস হাউস চট্টগ্রাম জানিয়েছে, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় বাংলাদেশ কাস্টমসের কঠোর অবস্থানেরই বাস্তব উদাহরণ হলো এই নিষিদ্ধ ঘনচিনির চালান আটক অভিযান।