
চট্টগ্রাম বন্দর টার্মিনালসমূহ পরিচালনা ও মালিকানা বিষয়ে সম্প্রতি কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সম্পূর্ণ “ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত, অসত্য ও বিভ্রান্তিকর” বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ জানায়— এসব অসত্য তথ্য সাধারণ জনগণ, বন্দর ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠান ও স্টেকহোল্ডারদের মাঝে ভুল ধারণা ও অযথা উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ স্পষ্টভাবে জানায়, বন্দর মালিকানা বা টার্মিনাল হস্তান্তর সংক্রান্ত যেকোনো প্রচার সম্পূর্ণ মিথ্যা। চট্টগ্রাম বন্দরের সকল টার্মিনাল, জেটি, ইয়ার্ড ও সংশ্লিষ্ট স্থাপনার একক ও পূর্ণ মালিকানা রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীনে রয়েছে এবং ছিল। দেশের বন্দরের কোন টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় চলে গেছে বা যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে— এমন দাবি “কখনোই সিদ্ধান্ত পর্যায়ে আসেনি কিংবা বিবেচনাতেও নেই।”
কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, বন্দরের অপারেশন দক্ষতা বৃদ্ধি, সময় ও ব্যয় সাশ্রয়, এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে প্রচলিত আইন ও বিধিবিধান অনুসরণ করে কেবল অপারেটর প্রতিষ্ঠানকে “লাইসেন্সধারী হিসেবে নিয়োগ” দেওয়া হয় মাত্র — যার মাধ্যমে টার্মিনাল পরিচালনায় বেসরকারি বিনিয়োগ যুক্ত হলেও মালিকানা থাকে সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে। এ প্রক্রিয়া “স্বচ্ছ, ন্যায্য, প্রতিযোগিতামূলক ও জনবান্ধব” বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
বন্দর কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে জানায়, কিছু গণমাধ্যম যাচাই-বাছাই না করে, নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত না করে, অনেক ক্ষেত্রে ধারণা বা অনির্ভরযোগ্য তথ্যের বরাতে সংবাদ প্রকাশ করছে— যা শুধু গণমানুষকে বিভ্রান্ত করছে না, বরং দেশের প্রধান অর্থনৈতিক লাইফলাইন হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম বন্দরের স্বাভাবিক কর্মপরিবেশকে ব্যাহত করছে। এই ধরনের মনগড়া সংবাদ “বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য, রপ্তানি-আমদানির প্রবাহ এবং জাতীয় অর্থনীতির স্থিতিশীলতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে”— বলেও উদ্বেগ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বন্দর একটি কৌশলগত জাতীয় স্থাপনা; ইচ্ছাকৃত বা অজ্ঞতাবশত বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ক্ষুণ্ন করে, স্টেকহোল্ডারদের আস্থায় আঘাত হানে এবং বিদেশি গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীদের মনোভাব প্রভাবিত করে— যা দেশের উন্নয়ন অভিযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে “বস্তুনিষ্ঠতা, পেশাদারিত্ব, নির্ভুলতা ও দায়িত্বশীলতা” অবলম্বনের আহ্বান জানায় এবং বিশেষভাবে অনুরোধ করে— ‘‘চট্টগ্রাম বন্দর সম্পর্কিত যেকোনো তথ্য প্রকাশের আগে যথাযথ যাচাই-বাছাই করে, বাস্তবতার ভিত্তিতে সংবাদ পরিবেশন করুন; বিভ্রান্তিকর ও অসত্য তথ্য পরিবেশন থেকে বিরত থাকুন।’’
বন্দর কর্তৃপক্ষ দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে এবং বন্দরের ক্রমবর্ধমান অগ্রযাত্রা বজায় রাখতে সকল পক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছে।