
মিরপুরে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের উচ্ছ্বাসে প্রাণবন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট দল চট্টগ্রামে টি–টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে নেমেছিল নতুন উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে। কিন্তু জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হতাশাজনক হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হলো টাইগারদের। তিন ম্যাচ সিরিজের উদ্বোধনী টি–টোয়েন্টিতে সোমবার বাংলাদেশ হেরে গেছে ১৬ রানে।

টস জিতে ১৬৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। পাওয়ার-প্লেতেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপের ভেতরে পড়ে দল।
সাইফ হাসান ৭ বলে ৮ রান করে বিদায় নেন আকিল হোসেনের বলে
তানজিদ হাসান (১৫) ও অধিনায়ক লিটন দাস (৫) দ্রুত সাজঘরে ফেরেন
উপরের সারির ব্যর্থতার পর তাওহীদ হৃদয় ও তানজিম হাসান সাকিব জুটি গড়ে কিছুটা প্রতিরোধ দেয়। হৃদয় ২৫ বলে ২৮ ও সাকিব ২৭ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলেন। তবে দুজনের পার্টনারশিপও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে চাপ থেকে বের হতে পারেনি বাংলাদেশ।

নাসুম আহমেদ (২০) ও রিশাদ হোসেন (৬) শেষ দিকে চেষ্টা করলেও কাজের কাজ হয়নি। তাসকিন আহমেদের ১০ ও মোস্তাফিজুর রহমানের ১১ রানে কেবল ব্যবধানটুকুই কমে। দুই বল হাতে রেখে ১৪৯ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সিলস ৩টি ও জেসন হোল্ডারও ৩ উইকেট নেন। আকিল হোসেন পান ২ উইকেট, খারি পিয়েরে ১টি।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজও শুরুতে ধীরগতির ছিল। ওপেনার আথানেজ শুরু থেকেই স্পিনারদের টার্গেট করে ২৭ বলে ৩৪ রান করেন। ব্র্যান্ডন কিংও ধীরগতিতে (৩৬ বলে ৩৩) ব্যাট চালিয়ে দলের ভিত্তি গড়েন। দুই ওপেনারের ৫৯ রানের উদ্বোধনী জুটি দলকে ভালো প্ল্যাটফর্ম দেয়।
আথানেজ আউট হওয়ার পর এসে খেলার চিত্র পাল্টে দেন অধিনায়ক শাই হোপ। আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিংয়ে ২৮ বলে ৪৬ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তার সঙ্গে শেষ দিকে রভম্যান পাওয়েল খেলেন ঝড়ো ৪৪ রান—মাত্র ২৮ বলে, ৪ ছক্কা ও ১ চারে। তানজিম সাকিবের শেষ ওভারে টানা তিন ছক্কায় স্কোর বড় করেন পাওয়েল।
বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন আহমেদ বল হাতে ছিলেন কার্যকর—দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন টানা দুই বলে, যদিও ৪ ওভারে ৩৬ রান খরচ হয়েছে। বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ ছিলেন সবচেয়ে কৃপণ—৪ ওভারে দিয়েছেন কেবল ১৫ রান, তবে উইকেট পাননি। রিশাদ হোসেন ১টি উইকেট শিকার করেন। সবচেয়ে খরুচে বোলার ছিলেন তানজিম সাকিব—৪ ওভারে দেন ৪৭ রান।
এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সিরিজে টিকে থাকতে হলে বাকি দুটি ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের। চট্টগ্রামেই পরের দুই ম্যাচ হবে সপ্তাহজুড়ে জনতার প্রত্যাশার আবহে—ভরসা এবার টাইগারদের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে।