মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:২০ অপরাহ্ন

টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

এস এন কায়সার জুয়েল
  • মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৬৮

বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষায় ৭৭ বছরের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে সামনে রেখে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি)-এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। ১৯৪৮ সালের ২৭ অক্টোবর ময়মনসিংহের খাগডহরে প্রতিষ্ঠিত এই ব্যাটালিয়ন স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান, সীমান্ত সুরক্ষা ও মাদক প্রতিরোধ অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে।

দীর্ঘ এ যাত্রায় ৩৪ জন বীর সেনানীর আত্মত্যাগ এবং অসংখ্য সদস্যের বীরত্বগাঁথায় সমৃদ্ধ হয়েছে ব্যাটালিয়নের ইতিহাস। সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে শাহাদাত বরণ, অপারেশন দাবানল, পাঞ্চিং টাইগার, পূর্ব প্রাচীরসহ একাধিক সফল অভিযানে অংশগ্রহণ এবং ১৯৯৯ সালে ‘বাংলাদেশ রাইফেলস স্ট্যান্ডার্ড’ পদক অর্জন করে ইউনিটটি বিশেষ মর্যাদা পায়।

২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে টেকনাফ সীমান্তে দায়িত্ব গ্রহণের পর ব্যাটালিয়নটি সর্বাধুনিক নজরদারি ব্যবস্থার মাধ্যমে ৩০ কিলোমিটার উপকূলীয় ও ২৩ কিলোমিটার সমুদ্রসীমা কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। মাদকবিরোধী যুদ্ধে টানা তিন বছর (২০১৬-১৮) “বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি” অর্জন ব্যাটালিয়নের অসামান্য সাফল্যের প্রমাণ।

২০২৪ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক বছরে ব্যাটালিয়নটি ১৭৯ জন আসামি গ্রেফতার, ৫৭ লক্ষাধিক ইয়াবা, ৪.২০৬ কেজি ক্রিস্টাল মেথ, ২.০৮৮০৩ কেজি স্বর্ণসহ মোট ২১৮ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের মাদক ও চোরাচালান পণ্য জব্দ করেছে। একই সময়ে দেশী–বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, গ্রেনেড ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণে।

এছাড়াও মিয়ানমারের অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে ৩৪ জন নিরাপত্তা বাহিনী সদস্যের নিরাপদ প্রত্যাবাসন, আরাকান আর্মির হাতে আটক ১২৪ জেলে ও ১৮টি নৌকা উদ্ধার, মানবপাচার রোধে ৮৭ পাচারকারী আটক এবং ৩৮৭ ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করেছে ব্যাটালিয়নটি।

মানবিক সেবায়ও টেকনাফ ব্যাটালিয়ন সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। গত এক বছরে শীতবস্ত্র বিতরণ, চিকিৎসা সেবা এবং আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন প্রায় ২৫০০ এর বেশি অসহায় মানুষ।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর তাৎপর্য তুলে ধরে ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান, পিএসসি বলেন—

যতদিন উড়বে লাল-সবুজ পতাকা, ততদিন আমরা দেশের সর্বদক্ষিণ সীমান্তের দুর্ভেদ্য প্রাচীর। যাদের আত্মত্যাগে আজকের মর্যাদা, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা নতুন করে শপথ নিয়েছি— দেশের অখণ্ডতা, নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে জীবন বিসর্জন দিতেও পিছপা হব না।”

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো খবর