মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৪৬ অপরাহ্ন

বে টার্মিনাল প্রকল্প: দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য মানচিত্রে বাংলাদেশকে শক্তিশালী করবে

জাহাঙ্গীর আলম
  • সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৯৮

বাংলাদেশের সমুদ্রবাণিজ্যে নতুন অধ্যায় যোগ করতে চট্টগ্রাম বন্দরের বহুল প্রতীক্ষিত ‘বে টার্মিনাল’ ২০৩০ সালের মধ্যে অপারেশনে যাবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস. এম. মুনিরুজ্জামান। তার ভাষায়, “বে টার্মিনাল চালু হলে দেশের অর্থনীতি, আমদানি-রপ্তানি এবং বাণিজ্য খাতে বিপুল সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে।”

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে বন্দর অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত “General Market Engagement Conference for the Bay Terminal Marine Infrastructure Development Project” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য মানচিত্রে নতুন শক্তি হবে বাংলাদেশ” রিয়ার অ্যাডমিরাল মুনিরুজ্জামান বলেন,বে টার্মিনাল শুধু চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াবে না, বরং দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য মানচিত্রে বাংলাদেশকে আরও সুদৃঢ় অবস্থানে নিয়ে যাবে।

এই টার্মিনাল চালু হলে জাহাজের অপেক্ষার সময় কমে আসবে,রপ্তানি প্রক্রিয়া আরও গতিশীল হবে,এবং দেশের সামগ্রিক জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

তিনি জানান, প্রকল্পের ডিজাইন, পরিকল্পনা ও প্রস্তুতিমূলক কাজ প্রায় সমাপ্ত, এবং দেশি-বিদেশি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক দরপত্র ও আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে।

২০২৫–২০৩১ মেয়াদে বাস্তবায়ন, অবস্থান উত্তর হালিশহর

প্রকল্পের কারিগরি তথ্য তুলে ধরে বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর কাওছার রশিদ বলেন—চট্টগ্রাম বন্দর বর্তমানে স্বাভাবিক সক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি মালামাল হ্যান্ডল করছে।এ  চাপ কমিয়ে ভবিষ্যৎ চাহিদা পূরণে বে টার্মিনাল এখন সময়ের দাবি।

তিনি জানান, বে টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ বাস্তবায়িত হবে ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০৩১ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে, প্রকল্পের অবস্থান নগরীর উত্তর হালিশহর এলাকার আনন্দবাজার উপকূলজুড়ে।

বে টার্মিনালকে আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে নির্মাণ করা হবে—গভীর সমুদ্রে ব্রেকওয়াটার ও নেভিগেশন চ্যানেল,
আধুনিক জেটি ও কনটেইনার হ্যান্ডলিং সুবিধা,
রেল ও সড়ক সংযোগসহ উন্নত লজিস্টিক অবকাঠামো,
কনটেইনার ইয়ার্ড, কন্ট্রোল টাওয়ার ও ডিজিটাল অপারেশন সিস্টেম,পূর্ণাঙ্গ মেরিন ও বন্দর সেফটি সিস্টেম।

ক্ষমতা হবে দ্বিগুণ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের হিসাবে—

বে টার্মিনাল চালু হলে বছরে ৩০ লাখ টিইইউ (Twenty-foot Equivalent Unit) কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা যাবে।

স্টেকহোল্ডাররা মনে করেন, এ প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ হয়ে উঠবে আঞ্চলিক লজিস্টিকস হাব এবং চট্টগ্রাম বন্দরের শতবর্ষী ঐতিহ্য নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।

এই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন—
দেশি ও বিদেশি সম্ভাব্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি,
বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ,
পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তা, প্রকৌশলী এবং শিপিং ও বাণিজ্য বিশেষজ্ঞগণ।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো খবর