
বাংলাদেশ রেলওয়ের সঙ্গে টিকিট বিক্রির চুক্তি বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিয়াজী আলমগীর আলম চৌধুরী এই রিট আবেদন করেন।
এর আগে গত ৩০ অক্টোবর রেলওয়ে ও টিকিট বিক্রির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ‘সহজ ডটকম’-এর মধ্যে সম্পাদিত প্রশ্নবিদ্ধ চুক্তি বাতিলের দাবিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
আইনি নোটিশটি রেজিস্ট্রি ডাকযোগে পাঠানো হয় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স), এবং সহজ ডটকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবরে।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছিল, সাত দিনের মধ্যে যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে। যেহেতু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, তাই জনস্বার্থে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে বলে জানান রিটকারী আইনজীবী।
অ্যাডভোকেট মিয়াজী আলমগীর আলম চৌধুরী বলেন, “রেলওয়ের টিকিট বিক্রির ওয়েবসাইটে গেট খোলার কয়েক মিনিটের মধ্যেই লাখ লাখ হিট পড়ে যায়। জনপ্রিয় রুটের ট্রেনের টিকিট মুহূর্তেই শেষ হয়ে যায়, ফলে বিপুলসংখ্যক যাত্রী টিকিট থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি সাধারণ মানুষের চলাচলের মৌলিক অধিকার হরণ করছে।”
তিনি আরও বলেন, “সম্পূর্ণ ই-টিকিটিং ব্যবস্থার কারণে জনসাধারণের চলাচলের ওপর অযথা শর্ত ও ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি সম্প্রতি সিলেটের জেলা প্রশাসকও মন্তব্য করেছেন— “দুই মিনিটে টিকিট শেষ, এটা কোনো সিস্টেম হতে পারে না।”
নোটিশে দাবি করা হয়েছিল,
১️, রেলওয়ে ও সহজ ডটকমের মধ্যে ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির চুক্তির শর্তাবলি জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।
২️, ওই চুক্তি স্থগিত করতে হবে।
৩️, ই-টিকিটিংয়ের একক পদ্ধতি বাতিল করে রেলওয়ের নিজস্ব ম্যানুয়াল টিকিট বিক্রি ব্যবস্থা আনুপাতিকভাবে পুনরায় চালু করতে হবে।
রিটে উল্লেখ করা হয়, জনগণের চলাচল ও গণপরিবহনে প্রবেশাধিকারের ওপর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ আরোপ সংবিধানসম্মত নয়, তাই এই চুক্তি জনস্বার্থবিরোধী ও বাতিলযোগ্য।
আইনজীবী মিয়াজী আলমগীর আলম চৌধুরী বলেন, “রেলওয়ের টিকিট বিক্রি একটি জনসেবামূলক কার্যক্রম। এটি কোনো বেসরকারি কোম্পানির বাণিজ্যিক প্ল্যাটফর্মে নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়। জনগণের স্বার্থে এই চুক্তি বাতিল হওয়া জরুরি।”