
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বায় কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়নের চৌধুরী দিঘীরপাড় হিন্দুপাড়া, কালি মন্দিরের পাশে জামছড়ি খাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ সিন্ডিকেটে রয়েছেন নিষিদ্ধ সংগঠন যুবলীগের এক নেতা, গ্রাম পুলিশের দফাদারসহ আরও কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। প্রভাব ও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চলমান এই বালু বাণিজ্যের কারণে কেউই মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না স্থানীয়রা।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জামছড়ি খালের পাশে বড় একটি বালুর স্তূপ রাখা হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এর অর্ধেক ইতোমধ্যে পাচার করা হয়েছে। খালের পাড় ভেঙে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে নতুন করে বালু উত্তোলন করে পাশের বিল এলাকায় আরও একটি স্তূপ তৈরি করা হচ্ছে।

পরিবেশবিদরা বলছেন, এভাবে বালু উত্তোলনের ফলে একদিকে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে সরকারের কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বালুভর্তি ট্রাক চলাচলের কারণে গ্রামীণ সড়কগুলোও দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে সিন্ডিকেটের সদস্য মো. আকতারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমাদের সিন্ডিকেটে আমি, দফাদার লিটন, যুবলীগ নেতা দিদার, বিদ্যুৎ চৌধুরীসহ মোট চারজন আছি। এসব বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছৈয়দ হোসেন অবগত আছেন।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রাম পুলিশের দফাদার লিটন দাশ বলেন, “বালু উত্তোলনের বিষয়ে আমি জানি, তবে আমি এতে জড়িত না। যারা বালু উত্তোলন করছে, তারা খতিয়ানভুক্ত জায়গা থেকেই তুলছে।”
এ বিষয়ে চরম্বা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছৈয়দ হোসেন বলেন,“বালু উত্তোলনের বিষয়ে আমি অবগত নই। সরজমিনে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে এই অবৈধ বালু ব্যবসা চলে আসছে প্রশাসনের নীরব ভূমিকায়। এখন দেখার বিষয়, কর্তৃপক্ষ সত্যিই কোনো ব্যবস্থা নেয় কিনা, নাকি আবারও ‘সিন্ডিকেটের ছায়ায়’ চাপা পড়ে যায় চরম্বার খাল।