
চন্দনাইশ: শীতকাল শুরু হতেই চন্দনাইশ উপজেলার শঙ্খ নদীর তীরবর্তী ও জেগে ওঠা চরগুলো কৃষকদের জন্য স্বর্ণের মতো সম্ভাবনার ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। দোহাজারী, লালুটিয়া, ধোপাছড়ি, কালিয়াইশ, পুরানগড়, আমিলাইশ, বাজালিয়া ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় নদীর চরে ও তীরবর্তী জমিতে শীতকালীন রকমারি সবজি চাষ হচ্ছে।
শীতকালে শঙ্খ নদীতে চর জেগে ওঠার ফলে কৃষকেরা এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নদীর তীরবর্তী কৃষকেরা বলছেন, “নদীর চর ও তীরে শীতকালীন সবজি চাষের ফলে ফলন ভালো হয় এবং জমির খাজনা দিতে হয় না। ফলে লাভ বেশি হয়।”
চরে ও তীরে চাষ হওয়া সবজিগুলোতে দেখা যায়:
বেগুন, লাউ, শিম, মূলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বরবটি, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া, তিতকরল, ভেন্ডী বিভিন্ন প্রকারের শাকসবজি।
কৃষকেরা জানাচ্ছেন, শীতকালীন সবজি চাষাবাদ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা লাভের মুখ দেখছেন। নদীর চর ও তীরবর্তী জমিতে শীতকালীন সবজি দ্রুত ফলন দেয়। হাইব্রিড বীজ ব্যবহারের কারণে কৃষকরা খুব দ্রুত ফলন পেয়ে বাজারজাত করে লাভবান হচ্ছেন।
শঙ্খ নদীর তীরবর্তী কৃষকেরা প্রতিদিন সকাল থেকে সেচ, স্প্রে ও ক্ষেত পরিচর্যা করে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কেউ নদী থেকে পানি তুলে সেচ দিচ্ছেন, কেউ স্প্রে বা পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন। harvested সবজি সরাসরি পাইকারি বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে।
দোহাজারী রেলওয়ে মাঠে প্রতিদিন সকালে কৃষকরা তাজা সবজি নিয়ে আসেন। মন্নান ও ফরিদ আহমদ জানান, নদীর পাড়ের ভিতরের অংশে ও জেগে ওঠা চরে সবজি চাষের কারণে খাজনা দিতে হয় না এবং বর্ষার পলির কারণে মাটি উর্বর থাকে, ফলে সার কম প্রয়োগ করেও ভাল ফলন পাওয়া যায়।
কৃষকরা বলছেন, শীত মৌসুমে নদীর তীরে বেগুন, লাউ, বরবটি, তিতকরল, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া সহ বিভিন্ন প্রজাতির সবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। হাইব্রিড বীজ ব্যবহারের কারণে দ্রুত ফলন ও বাজারজাত করা সম্ভব হচ্ছে।
এভাবে আবাদ চলবে প্রায় দুই থেকে তিন মাস। উৎপাদিত সবজি চট্টগ্রাম শহর ও পার্শ্ববর্তী উপজেলায় সরবরাহ হচ্ছে।
চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ আজাদ হোসেন জানান, “শঙ্খ নদীর তীরবর্তী এলাকা ও জেগে ওঠা চরে শীতকালীন সবজি উৎপাদন ব্যাপক। এটি স্থানীয় চাহিদা মেটাচ্ছে এবং শহরে সরবরাহ হচ্ছে। কৃষকেরা নিয়মিত আবাদ করে ভালো ফলন ও লাভ পাচ্ছেন। ফলে শঙ্খ নদীর তীরবর্তী কৃষকরা সচ্ছল জীবনযাপন করছেন।”
শঙ্খ নদীর চর ও তীরবর্তী জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। খাজনা মুক্ত, উর্বর মাটি এবং হাইব্রিড বীজ ব্যবহারের কারণে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। নদীর তীর যেন এক বিশাল সবুজ চাদরে ঢেকে গেছে, যেখানে বেগুন, লাউ, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বরবটি, টমেটোসহ নানা সবজি চাষ হয়ে যাচ্ছে।
নদীর চর ও তীরবর্তী জমির এই সবজি চাষ শুধু কৃষকের আয় বাড়াচ্ছে না, বরং স্থানীয় বাজারে তাজা সবজি সরবরাহ নিশ্চিত করছে।