মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ১১:০৯ অপরাহ্ন

রিকশাচালক খুন, ৩ দিনের অভিযানে ঘাতক গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫
  • ১৩৬

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির ভূজপুরে চাঞ্চল্যকর এক হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক মো. বেলাল (৪০)-কে নির্মমভাবে হত্যা করে তার রিকশা ও মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৩ দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে হত্যাকারীকে গ্রেফতার করেছে ভূজপুর থানা পুলিশ।

ঘটনার সূত্রপাত গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে রাতে। নিহত বেলালকে চোলাই মদ পান করিয়ে কৌশলে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির নিউ দাঁতমারা চা বাগানে নিয়ে যায় তৌহিদুল ইসলাম ওরফে বানিয়া (২৪)। এরপর সেখানে ছুরি দিয়ে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করে রিকশা ও মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় ঘাতক।

পরবর্তীতে ২৭ ফেব্রুয়ারি চা বাগান এলাকা থেকে বেলালের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে ভূজপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ঘটনার প্রায় ৫ মাস পর, ২২ জুলাই ২০২৫ নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার শিমরাইল তালতলা এলাকা থেকে মূল অভিযুক্ত তৌহিদুল ইসলাম (২৪)-কে গ্রেফতার করে ভূজপুর থানা পুলিশ।

পরদিন, ২৩ জুলাই, তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ সদর থানা এলাকা থেকে নিহতের মোবাইল ফোন এবং ফেনীর মহিপাল এলাকা থেকে ছিনতাইকৃত ব্যাটারিচালিত রিকশার ৪টি ব্যাটারি উদ্ধার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামি তৌহিদ জানায়, একসময় বেলাল তক্ষক (Tokay Gecko) কেনার আগ্রহ প্রকাশ করলে সে তাকে একটি তথাকথিত “পার্টির” সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। পরে বেলাল বুঝতে পারেন যে এটি একটি প্রতারক চক্র। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি তৌহিদকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।

এই ক্ষোভ থেকেই হত্যার পরিকল্পনা করে তৌহিদ। পরিকল্পনা অনুযায়ী সে বেলালকে প্রথমে মদ খাইয়ে অচেতন করে, এরপর তাকে হত্যা করে মোবাইল ফোন ও রিকশা ছিনতাই করে।

ছিনতাইকৃত রিকশার রং পরিবর্তন করে ফেনীতে গিয়ে ব্যাটারি খুলে দোকানে বিক্রি করে সে। পরে রিকশাটি রাস্তার পাশে ফেলে রেখে আবার নারায়ণগঞ্জে চলে যায়।

ভূজপুর থানা পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়,
“প্রযুক্তির সহায়তায় আসামির অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার দেওয়া তথ্যমতে উদ্ধার করা হয় গুরুত্বপূর্ণ আলামত। হত্যাকাণ্ডটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং প্রতিহিংসামূলক।”

এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় স্থানীয়ভাবে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পুলিশি তৎপরতায় আসামির গ্রেফতার ও আলামত উদ্ধার নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের প্রতারণা ও প্রতিহিংসার জটিল কাহিনী সমাজে অপরাধপ্রবণতার ভয়াবহ চিত্র ফুটিয়ে তোলে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো খবর